অল্প পুঁজির অধিক লাভের ব্যবসা ফুড সাপ্লাই
অল্প পুঁজির অধিক লাভের ব্যবসা ফুড সাপ্লাইয়ের অফিস ও বাসায় খাবার সরবরাহ করাটাই হতে পারে ব্যবসা। আর এ ব্যবসা করা যায় ঘরে বসেই। কাজের চাপে অফিসের বাইরে গিয়ে খাওয়ার সময় বের করা অনেক সময়ই কঠিন হয়ে পড়ে। ব্যস্ততার মধ্যেও যাঁরা অফিসে বসে বাড়িতে তৈরি খাবার খেতে চান; কিন্তু এড়াতে চান টিফিন বক্স বয়ে বেড়ানোর ঝামেলা, তাঁদের জন্য আছে হোমমেড ক্যাটারিং হাউস। শুধু অফিস নয়, এসব প্রতিষ্ঠান থেকে বাসায়ও খাবার সরবরাহ করা হয়। শহরাঞ্চলে বিশেষ করে থানা, জেলা বা বিভাগীয় শহরে এ ব্যবসার সম্ভাবনা বেশি।
ব্যবসা যখন ফুড সাপ্লাইয়ের অফিস ও বাসায় খাবার সরবরাহ করাটাই হতে পারে ব্যবসা। আর এ ব্যবসা করা যায় ঘরে বসেই। কাজের চাপে অফিসের বাইরে গিয়ে খাওয়ার সময় বের করা অনেক সময়ই কঠিন হয়ে পড়ে। ব্যস্ততার মধ্যেও যাঁরা অফিসে বসে বাড়িতে তৈরি খাবার খেতে চান; কিন্তু এড়াতে চান টিফিন বক্স বয়ে বেড়ানোর ঝামেলা, তাঁদের জন্য আছে হোমমেড ক্যাটারিং হাউস। শুধু অফিস নয়, এসব প্রতিষ্ঠান থেকে বাসায়ও খাবার সরবরাহ করা হয়। শহরাঞ্চলে বিশেষ করে থানা, জেলা বা বিভাগীয় শহরে এ ব্যবসার সম্ভাবনা বেশি।
খাবারের তালিকায় থাকতে পারে সকালের নাশতা, দুপুর ও রাতের খাবার, ফাস্ট ফুডসহ চাহিদা আছে এমন অনেক কিছু। এ ব্যবসার মাধ্যমে নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ অনেক বেশি। কারণ বাড়িতে বসেই এ ব্যবসা চালানো সম্ভব। তবে এ ব্যবসায় নামার আগে রান্নায় নিজের হাতটা পাকিয়ে নেওয়া চাই। যেকোনো প্রশিক্ষণকেন্দ্র থেকে রান্না শিখতে পারেন। রান্নার কাজটা নিজে না করতে চাইলে রাখতে পারেন দক্ষ বাবুর্চি।
যেভাবে শুরু করবেন?
প্রশিক্ষণ নিয়ে অল্প পরিসরে আপনার কিচেন থেকেই শুরু করতে পারেন। প্রথমে ঠিক করুন কোন ধরনের প্রতিষ্ঠান বা কোন এলাকায় খাবার সরবরাহ করবেন। এর পর খাবারের আইটেম নির্ধারণ করুন। স্থানভেদে খাবারের আইটেমের জনপ্রিয়তার পার্থক্য দেখা যায়। যেমন শিক্ষার্থীদের কাছে ফাস্টফুড বা স্ন্যাকসজাতীয় খাবার বেশ জনপ্রিয়। ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে কেক-বিস্কুট, পিঠাপুলি আর স্ন্যাকসজাতীয় খাবারের চাহিদা বেশি। সুপারশপগুলো সাধারণত বিভিন্ন ফ্রোজেন খাবারের অর্ডার দিয়ে থাকে। বিভিন্ন অফিসে বা বাসায় দুপুর ও রাতের খাবার আইটেমের মধ্যে ভাত, তরকারি, খিঁচুড়ি ইত্যাদির চাহিদা বেশি। বিকেলের নাশতায় অফিসে কেক, পিঠা, নুডলস সরবরাহ করতে পারেন।
রাজধানীর অনেক ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে আজকাল হোমমেড ফুড প্যাকেটে করে বিক্রি করা হচ্ছে। এসব খাবার পণ্যের মধ্যে রয়েছে কেক, কুকিজ, বিস্কুট, পিঠা, পনির, লাড্ডু, মোয়া, মুড়ালি, সিঙ্গারা, সমুচা, স্যান্ডউইচ ইত্যাদি। ডিপার্টমেন্টাল স্টোরেও খাবার সরবরাহ করতে পারেন। আর অফিসপাড়ায় বরাবরই দুপুরের খাবারের চাহিদা রয়েছে। খাবারের আইটেমের ওপর নির্ভর করেই খাবার তৈরিতে ব্যবহার্য সরঞ্জাম কিনতে হবে। অফিসে বা বাসায় বাসায় খাবার সরবরাহ করার জন্য দু-একজন ডেলিভারি বয় রাখতে হবে।
কিভাবে চালাবেন প্রচার?
কথায় আছে প্রচারই প্রসার। তাই একটা ব্যবসা দাঁড় করানোর জন্য প্রচারের বিকল্প নেই। তবে যেহেতু আপনার পুঁজি অল্প তাই পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়ার প্রয়োজন নেই। বিনা খরচায় সামাজিক যোগাযোগের জনপ্রিয় মাধ্যম ফেসবুকে প্রতিষ্ঠানের নামে পেজ খুলে প্রচারণা চালাতে পারেন। খাবারের তালিকার নিচে দিন যোগাযোগের নম্বর। এক সময় দেখবেন, এখান থেকেই অনেক অর্ডার আসছে। সম্ভব হলে আপনার পাড়ায়-মহল্লায় পোস্টারিং, দেয়াললিখন করতে পারেন। অফিসে বিলি করতে পারেন লিফলেট।
ঝুঁকির বালাই নেই
৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা হলেই ব্যবসাটি শুরু করা সম্ভব। ব্যবসা শুরুর জন্য বেশি জিনিসপত্র কেনারও প্রয়োজন হয় না। ব্যবহার করতে পারেন বাসার রান্নার সামগ্রী,হাঁড়ি-কড়াই। তবে ফাস্টফুড আইটেম তৈরি করতে চাইলে একটি ওভেন, ব্লেন্ডার, ডাইস ইত্যাদির প্রয়োজন হয়। সঙ্গে চাই ফ্রিজ।
সাধারণত একটি ইলেকট্রিক ওভেন পাঁচ-সাত হাজার টাকা, গ্যাস ওভেন ১৪০০-১৫০০ টাকা, বিটার ৮০০-২০০০ টাকা, ব্লেন্ডারের দাম ১৮০০-২৫০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। অনেক ব্যবসায় মোটা অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করতে হয় বলে পান থেকে চুন খসলেই বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। কিন্তু ক্যাটারিং সার্ভিসে এর বালাই নেই। কারণ এ ব্যবসায় বিনিয়োগ অল্প। আর পণ্য পৌঁছে দিলে সে দিনই বিক্রির টাকা আপনার হাতে চলে আসবে।
খেয়াল রাখতে হবে খাবারের মানের ব্যাপারে কখনোই আপস করা যাবে না। কারণ খাবার সুস্বাদু ও মানসম্মত না হলে গ্রাহক দ্বিতীয়বার আগ্রহী হবে না। অন্যদিকে একবার সুনাম ছড়িয়ে পড়লে গ্রাহকের অভাব হবে না। খাবারের মূল্য যাতে ক্রেতার সাধ্যের মধ্যে থাকে, সে ব্যাপারটাও খেয়াল করতে হবে।
অর্পডারের পর যত দ্রুত সম্ভব খাবার গ্রাহকের ঠিকানায় পৌঁছে দিতে হবে। যেকোনো একটি এলাকা বেছে এ ব্যবসায় মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। বড় পরিসরে ব্যবসা শুরু করলে আয়ের পরিমাণ আরো বাড়বে।