ফটোকপি এবং প্রিন্টিং ব্যবসা,বর্তমানে সকল অফিস-আদালত,বাজার-ঘাট,স্কুল-কলেজসহ সবখানেই ডিজিটালের ছোঁয়া। তাই অনলাইন ভিত্তিক কাজ করার জন্য ফটোকপি এবং প্রিন্টিং ব্যবসা টি খুবই যুগোপযোগী এবং লাভজনক। আজকের আর্টিকেলটির আলোচিত বিষয় ফটোকপি এবং প্রিন্টিং মেশিন ব্যবসার আইডিয়া। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে শেয়ার করে আরেকজন ফটোকপি ও প্রিন্টিং মেশিন আগ্রহী ব্যবসায়ীকে পড়ার সুযোগ করে দিবেন। ফটোকপি এবং প্রিন্টিং ব্যবসা করতে হলে নিচের কিছু বিষয় অবশ্যই জানতে হবে।
ফটোকপি এবং প্রিন্টিং ব্যবসা
বর্তমানে কোনো কাজ বিনা অফিসিয়াল ডকুমেন্টস কাগজ ছাড়া করা সম্ভব নয়,তাই আমরা দেখে থাকি কোনো অফিসের আশেপাশে ফটোকপি বা প্রিন্টিং এর দোকান থাকে যেখানে খুব সহজেই একটি অরজিনাল নতির ডুপ্লিকেট বানিয়ে দেওয়া হয়।
এখনকার দিনে এটি খুবই উন্নত ব্যবসা যা থেকে কাজের অনুপাতে উপার্জন করা যায়।
সঠিক জায়গা নির্ধারণ করা
ফটোকপি এবং প্রিন্টিং ব্যবসা করতে হলে আপনাকে লোকের ভিড় বা জনসংখ্যাবহুল স্থানে দোকানটা নিতে হবে যেন লোকেরা জানতে পারে এখানে একটি ফটোকপি এবং প্রিন্টিং মেশিন আছে। এক্ষেত্রে আপনি নিজ এলাকায় বা বাসস্ট্যান্ডে এমকি শহরের মধ্যে যে কোনো জায়গায় দোকানটি শুরু করতে পারেন।আপনার এলাকায় দোকান দিলে আপনার। এলাকার পরিচিত লোকেরা এবং তাদের বন্ধুবান্ধব আপনার দোকান থেকে ফটোকপি এবং প্রিন্টিং করাবে অথবা শহরে দোকানটি থাকলে আপনি স্কুল কলেজের কাজ,থানার কাজ,ব্যাংকের কাজ,সরকারি অফিসের কাজ বেশি পরিমাণে করতে পারবেন।
প্রয়োজনীয় জিনিস এবং টাকা বিনিয়োগ
যে কোনো ব্যবসা করতে প্রথমে সেই ব্যবসা অনুযায়ী কোন কোন জিনিস প্রয়োজন তা নির্ধারণ করতে হয় এবং কত টাকা প্রয়োজন হতে পারে সেই দিকটাও বিবেচনায় রাখতে হয়। বর্তমানে আপনি যদি ফটোকপি এবং প্রিন্টিং ব্যবসা শুরু করতে চান তাহলে কমপক্ষে এক লাখ টাকার মতো বিনিয়োগ করতে পারেন বা এর বেশিও বিনিয়োগ করতে পারেন। দোকানে রুম খরচ বাদে ফটোকপি মেশিনের দাম ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা,পাওয়ার মেইনটেইন করার জন্য স্টিভলেজার ২০০০ টাকা,প্রিন্টার মেশিন ২০ থেকে ৩০ হাজার, কম্পিউটার ২০ হাজার ও ২০০ টাকার A4 সাইজ কাগজ প্রয়োজন।
তবে এই ব্যবসা শুরু করার জন্য আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী বিনিয়োগ করুন।
ফটোকপি ও প্রিন্টিং মেশিন নির্বাচন
বর্তমান যুগ কম্পিটিশনের যুগ।আপনার ব্যবসার প্রয়োজনের জন্য সঠিক ফটোকপি এবং প্রিন্টিং মেশিন নির্বাচন করা আপনার প্রতিদিনের ক্রিয়াকলাপগুলিতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। আপনাকে ফটোকপি এবং প্রিন্টিং মেশিন কেনার আগে ভালোভাবে মাথায় রাখতে হবে যে মেশিনটি যেন স্পষ্ট ছবি ও মিনিটে বেশি পরিমাণ ফটোকপি প্রিন্ট হয়।একটি ভালো মেশিন থেকে প্রতি মিনিটে ৩০ টি থেকে ৪৫ টি ফটোকপি বের করলে সেটি ব্যবসার জন্য ভালো।এছাড়াও মুদ্রণের গতি,ডুপ্লেক্সিং কাগজের ক্ষমতা, প্রিন্টিং কোয়ালিটি, কালির ধরণ ও ছবির গুনমানের মতো মূল বৈশিষ্ট্যগুলো বিবেচনা করে, আপনার ফটোকপি এবং প্রিন্টিং মেশিন বেছে নিতে পারেন যা আপনার ব্যবসার প্রয়োজনীয়তা পূরণ করবে। Canon,Toshiba, Sharp,Konica এবং Hp হলো বাজারের কিছু সেরা ফটোকপি মেশিন কোম্পানি যা আপনার ব্যবসায়িক কার্যক্রমগুলিতে সাহায্য করার জন্য উন্নত ও উপযুক্ত।
ফটোকপি এবং প্রিন্টিং ব্যবসার কিছু টিপস
উক্ত ব্যবসাকে কম সময়ের মধ্যে এবং সেখান থেকে অধিক পরিমাণে টাকা আয় করার জন্য কিছু টিপস ভালোভাবে অনুসরণ করতে হবে যা আপনার ব্যবসাকে গ্রো করার জন্য অনেকখানি সাহায্য করবে।
- খুচরো গ্রাহককে ভালো ও স্পষ্ট ফটোকপি দিবেন।
- স্কুল শিক্ষার্থীদের আকর্ষণ করতে হবে এবং সময়ে সময়ে কিছু ডিসকাউন্ট দিবেন,ফলে স্থায়ী গ্রাহক হয়ে যাবে। কেননা, অনেক ছাত্র ছাত্রী ক্লাস নোট ফটোকপি করে থাকে।
- আশে পাশে সমস্ত টিউশন শিক্ষকদের সাথে ভালো সম্পর্ক রাখুন, সেখান থেকে অনেক কাজ পাওয়া যেতে পারে।
- সরকারি অফিস, ব্যাংক,বীমা ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের সাথে কথা বলে রাখুন, তাদের প্রয়োজনীয় ফটোকপি ও প্রিন্টিং যেন আপনার দোকান থেকে করায়।
- বড় বড় ইউনিভার্সিটি শিক্ষার্থীদের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি নোট অনলাইন থেকে কালেকশন করুন এবং নোটিশ হিসেবে রাখুন। তাহলে সবাই বুঝবে, এগুলো আপনার এখানে পাওয়া যায়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার
সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো থেকে ব্যবসায়ীরা প্রচুর উপকৃত হচ্ছে।আপনার ফটোকপি এবং প্রিন্টিং মেশিন দোকানের প্রচারণা ও খ্যাতি অর্জনের জন্য জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন ফেসবুক,ইনস্টাগ্রাম,টুইটারে একটি পেজ খোলা যেতে পারে।যেখানে পোস্টের মাধ্যমে ডিসকাউন্ট অফার দিতে পারেন এবং জনগনের কাছে আপনার দোকানটি পরিচালনার বিভিন্ন তথ্য শেয়ার করতে পারেন। এতে জনসমাজে আপনার ব্যবসার বিস্তৃতি ঘটবে।
উপসংহার
ফটোকপি এবং প্রিন্টিং মেশিন ব্যবসা খুবই উন্নতমানের ব্যবসা।যেহেতু এটি যন্ত্রপাতি নির্ভর ব্যবসা তাই এগুলো রক্ষণাবেক্ষণ,কালি,মিডিয়া ইত্যাদি বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখতে হবে। সঠিকভাবে ব্যবসা শুরু করলে অনেক কম সময়ের মধ্যে ভালো উপার্জন করতে পারেন এবং আপনি বাংলাদেশের একজন সফল ব্যবসায়ী হতে পারেন।